ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামের বাণী গুলো খুবই প্রেরণামূলক। তিনি ছাত্রজীবন এর উদ্দ্যেশে বলেছেন- শিক্ষা হল একটা ইন্সট্রুমেন্ট যা তাদের উইংস দিয়ে থাকে, স্বপ্ন পুরনের জন্য বা সুদূর ভবিষ্যতে ডানা মেলে ওড়ার জন্য।
ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামের পুরো নাম – আবুল পাকির জয়নুল আবেদিন আবদুল কালাম
জন্ম- ১৫ই অক্টোবর,১৯৩১
জন্মস্থান- রামেশ্বরম , তামিলনাড়ু
মৃত্যু- ২৭শে জুলাই, ২০১৫
কর্মজীবন
শৈশব বেলাতেই দারিদ্র তাকে বাধ্য করেছিল অর্থাভাবের তাড়নায় জীবন সংগ্রামের তেতো স্বাদ নিতে। আর তাইতো তিনি ওই একরত্তি বয়সে সংবাদপত্র বিক্রি করে বাবা কে সাহায্য করতেন।
তিনি পদার্থবিদ্যা এবং বিমান প্রযুক্তিবিদ্যা নিয়ে পড়াশুনো করেছিলেন। তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেন একজন বিজ্ঞানী হিসেবে DRDO তে। ১৯৬৯ সালে তিনি ISRO তে জয়েন করেন। রকেট উন্নয়নের কাজে তার অবদান অপরিসীম। এই কারনে তাকে “Missile Man of India” বলা হয়। ১৯৯৭ সালে তিনি ভারতের সবচে বড় সিভিলিয়ান এ্যাওয়ার্ড ,ভারত রত্ন পেয়েছিলেন।
তিনি ২০০২ সালে ভারতের ১১ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০২ থেকে ২০০৭ অবধি তিনি এই কাজে নিযুক্ত থাকেন। অফিস জীবন শেষে তিনি বিভিন্ন আই আই টি ইন্সটিটিউট গুলোতে ভিজিটিং প্রফেসর, লেখক এবং জনসেবক হিসেবে ছিলেন।
তারপর ২০১২ সালে ভারত থেকে দুর্নীতি কে দূর করতে তিনি যুব সমাজের জন্য একটি প্রোগ্রাম লঞ্চ করেছিলেন, যার নাম –“What can I give movement”।
তার লিখা বই –
উইংস অফ ফায়ার, ইগনাইটেড মাইন্ডস, ইনডোমিটেবল স্পিরিট, মাই স্পিরিচুয়াল এক্সপিরিএন্সেস উইথ প্রমুখ স্বামীজি।
ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামের বাণী
স্বপ্ন নিয়ে ডঃ আব্দুল কালামের বাণী
স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তোমাকে স্বপ্ন দেখে যেতে হবে।
ডঃ আব্দুল কালাম
স্বপ্ন দেখা হল স্বপ্ন পূরণ করার প্রথম ধাপ। স্বপ্ন দেখা মানে মনের মধ্যে এক অসম্ভব জেদ, একটা সুন্দর কল্পনা, একটা ভিজুইলাইজেশেন যা তোমাকে তাড়া করে বেড়াবে।
স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে। স্বপ্ন সেটাই যেটা পূরণ না হওয়া অবধি ঘুমনো যায় না।
ডঃ আব্দুল কালাম
সারাক্ষণ একটা অস্থিরতা, চিন্তা যা তোমাকে পরিশ্রম করতে বাধ্য করবে, যা তোমাকে ঘুমোতে দেবে না।
সবসময় বড় স্বপ্ন দেখো। ছোট স্বপ্ন দেখা অপরাধ।
ডঃ আব্দুল কালাম
সাফল্য নিয়ে ডঃ আব্দুল কালামের বাণী
সফলতার গল্প পড় না, কারন তা থেকে তুমি শুধু বার্তা পাবে। ব্যর্থতার গল্প পড়, তাহলে সফল হওয়ার কিছু ধারনা পাবে।
ডঃ আব্দুল কালাম
আমরা শুধু সাফল্যের উপর গড়ি না, আমরা ব্যর্থতার উপরেও গড়ি।
ডঃ আব্দুল কালাম
প্রথম সাফল্যের পর বসে থেকো না। কারণ দ্বিতীয়বার যখন তুমি ব্যর্থ হবে তখন অনেকেই বলবে প্রথমটিতে শুধু ভাগ্যের জোরে সফল হয়েছিলে।
ডঃ আব্দুল কালাম
ডঃ কালাম ওপরে উল্লিখিত কথাগুলোর মাধ্যমে বলতে চেয়েছেন – ব্যর্থতা হল সাফল্যের প্রথম ধাপ, সাফল্যের মই। আর যেসব মহান ব্যাক্তিরা ওই মই এর গল্প বলেছেন, সেইসব মহান ব্যাক্তিদের গল্প পড়া উচিৎ। এইসব গল্প থেকে আমরা সাফল্য অর্জনের চাবিকাঠি পাবো।
তাইতো ব্যর্থতার গল্প আমাদের আগে পড়া উচিৎ। সাফল্যের গল্পে আমরা কোন টিপস পাবো না, হয়তো অবাক হয়ে ভাববো কি করে উনারা এতো বড় জায়গায় পৌঁছালেন। মিষ্টি ফলের বিবরন জানতে হলে শিকড়কে জানা আবশ্যক।
ফেল করে হতাশ হয়ো না। ইংরেজি শব্দ ফেল ‘Fail’ মানে ‘First Attempt in Learning’ অর্থাৎ ‘শেখার প্রথম ধাপ’। বিফলতাই তোমাকে সফল হবার রাস্তা দেখিয়ে দেবে।
ডঃ আব্দুল কালাম
বাংলাতেও কিন্তু ‘ব’ ‘স’ এর আগে আসে। আর ‘ব’ তে তো ব্যর্থতা এবং ‘স’ তে সাফল্য। সাফল্যের রাস্তা টা শুরুতে ব্যর্থতায় ভরা থাকে যেমন গোলাপ গাছে ফুল অবধি পৌঁছাবার আগে গাছের কান্ডে অনেক কাঁটা থাকে।
শিক্ষা নিয়ে ডঃ আব্দুল কালামের বাণী
সেই ভালো শিক্ষার্থী যে প্রশ্ন করে। প্রশ্ন না করলে কেউ শিখতে পারে না। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করার সুযোগ দিতে হবে।
ডঃ আব্দুল কালাম
শিক্ষার্থীদের প্রশ্নগুলোতে শুধুমাত্র তারাই শিখে না বরং শিক্ষকও শিখে থাকেন। প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে যতই আলোচনা হবে ততই আমাদের সকলেরই ব্রেন এর সেল গুলো ভাবতে শিখবে। আর ভাবা মানেই তো ইমাজিনেশেন। ইমাজিনেশেন ছাড়া শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না।
সমাপ্তি মানেই শেষ নয়। ‘END’ শব্দটির মানে হচ্ছে ‘Effort Never Dies’ অর্থাৎ ‘প্রচেষ্টার মৃত্যু নেই’।
ডঃ আব্দুল কালাম
সেইজন্যই তো সকলের উচিৎ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। তুমি ধীর গতিতে এগোতে পারো, কিন্তু থেমে যেও না।
একজন খারাপ ছাত্র একজন দক্ষ শিক্ষকের কাছ থেকে যা শিখতে পারে তার চেয়ে একজন ভালো ছাত্র একজন খারাপ শিক্ষকের কাছ থেকে অনেক বেশি শিখতে পারে।
ডঃ আব্দুল কালাম
পড়াশুনোতে নম্বর কম পেলেই সাধারনত আমরা তাকে খারাপ ছাত্র বা ছাত্রী বলে থাকি। সেইরকম কোন শিক্ষক যদি ভালো পড়াতে না পারে, তাহলেই তো আমরা তাকে খারাপ শিক্ষক বলে থাকি।
কিন্তু সেই ছাত্র বা ছাত্রীর মধ্যে যদি ইচ্ছাশক্তি থাকে তাহলে সেই খারাপ ছাত্র বা ছাত্রী ভালো শিক্ষকের থেকে বেশ ভালো শিখতে পারবে।
জাতির সবচেয়ে ভালো মেধা ক্লাসরুমের শেষ বেঞ্চ থেকে পাওয়া যেতে পারে।
ডঃ আব্দুল কালাম
জীবন নিয়ে ডঃ আব্দুল কালামের বাণী
জীবন ও সময় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। জীবন শেখায় সময়কে ভালোভাবে ব্যবহার করতে আর সময় শেখায় জীবনের মূল্য দিতে।
ডঃ আব্দুল কালাম
পরিস্থিতি যে কোন সময় পরিবর্তন হতে পারে, জীবনে কাউকে কষ্ট দিও না। আজ হয়তো তুমি শক্তিশালী, কিন্তু একটা কথা জেনে রাখো সময় তার থেকেও বেশী শক্তিশালী।
ডঃ আব্দুল কালাম
সময় সবচে বড় শিক্ষক। সময়ের ভেলাতে চড়েই আমারা ব্যর্থতার স্বাদ পাই।
বৃষ্টির সময় প্রত্যেকটি পাখিই কোথাও না কোথাও আশ্রয় নেয়। কিন্তু ঈগল মেঘের উপর দিয়ে উড়ে বৃষ্টিকে এড়িয়ে যায়।
ডঃ আব্দুল কালাম
জীবনে সবাইকে গুরুত্ব দাও কারন যে ভালো সে তোমার সাথ দেবে, আর যে খারাপ সে তোমায় শিক্ষা দেবে।
ডঃ আব্দুল কালাম
সূর্যের মতো আলো ছড়াতে চাও, তাহলে সূর্যের মতো জ্বলো আগে।
ডঃ আব্দুল কালাম
একটা ভালো বই একশো বন্ধুর সমান কিন্তু একজন ভালো বন্ধু একটি লাইব্রেরীর সমান।
ডঃ আব্দুল কালাম
তিনজনই পারেন একটি দেশ বা জাতিকে বদলাতে। আর সেই তিনজন হলেন বাবা, মা ও শিক্ষক।
ডঃ আব্দুল কালাম
মানুষ তার ভবিষ্যত পরিবর্তন করতে পারে না, কিন্তু অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারে। অভ্যাসই মানুষের ভবিষ্যত পরিবর্তন করে দেয়।
ডঃ আব্দুল কালাম
উদার ব্যক্তিরা ধর্মকে ব্যবহার করে বন্ধুত্বের হাত বাড়ান। কিন্তু সংকীর্ণমনস্করা ধর্মকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।
ডঃ আব্দুল কালাম
যারা মন থেকে কাজ করে না, তারা আসলে কিছুই পায় না। আর পেলেও সেটা হয় অর্ধেক হৃদয়ের সফলতা। তাতে সব সময়ই একরকম তিক্ততা থেকে যায়।
ডঃ আব্দুল কালাম
তরুণ প্রজন্মদের ভিন্নভাবে চিন্তা করবার সাহস থাকতে হবে। মনের ভেতর আবিষ্কারের তাড়না থাকতে হবে। নিজের সমস্যা নিজে মেটাবার মানসিকতা থাকতে হবে।
ডঃ আব্দুল কালাম
কাউকে হারিয়ে দেয়াটা খুব সহজ, কিন্তু কঠিন হলো কারো মন জয় করা।
ডঃ আব্দুল কালাম
তুমি যদি তোমার কাজকে স্যালুট করো, দেখো তোমাকে আর কাউকে স্যালুট করতে হবে না। কিন্তু তুমি যদি তোমার কাজকে অসম্মান করো, অমর্যাদা কর, ফাঁকি দাও, তাহলে তোমার সবাইকে স্যালুট করতে হবে।
ডঃ আব্দুল কালাম
সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন, সবাইকে ভালো রাখুন। চলুন, সবাই মিলে একসাথে এক সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলি। এই পৃথিবীর প্রতিটি কোনা ভরে উঠুক ঈশ্বরের আশীর্বাদে!