আত্মহত্যার কারন ও প্রতিকার গুলো কি কি?

জীবন শেষ করতে কেন ইচ্ছে করে

আপনার কি প্রচুর হতাশ লাগছে? চাকরী চলে যাওয়ায় ভাবতে পারছেন না কি করে পরিবার কে রক্ষা করবেন? তাই কি আত্মহত্যার কথা ভাবছেন? আত্মহত্যা করার আগে একটিবারের জন্য হলেও আত্মহত্যার কারন ও প্রতিকার গুলো সম্পর্কে জানুন, যা আপনাকে এই সমস্যা থেকে রেহাই দেবে।

কিংবা আপনার ব্যবসা কি একদমই চলছে না? ব্যবসাতে কি লস হচ্ছে? বাড়ীতে প্রচুর খরচ, শ্রমিকদের মাইনে দিতে পারেন না? দুই মেয়ের বিয়ে কিভাবে দেবেন তাই কি ভাবছেন?

চাকুরির অভাবেই কি আত্মহত্যা
বেকারত্বের কারনেই কি আত্মহত্যা

অথবা আপনার প্রেমিকা কি হটাত করে আপনাকে রিজেক্ট করে দিয়েছেন? আপনার আর কিছুই ভালো লাগছে না? প্রত্যেকদিন কি ভাবেন যে আর বেঁচে থাকবেন না !

তাহলে please কিছুক্ষণ আমার সাথে আমার পেজ এ থাকুন। শেষ অবধি পড়ুন আর তারপরে বলুন যে আপনার কেমন অনুভব হচ্ছে? এখানে আমরা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো- আত্মহত্যা কি, কেন করতে ইচ্ছে করে, এবং আত্মহত্যার কারন ও প্রতিকার গুলো কি কি।

আত্মহত্যা কি

“আত্ম” কথার অর্থ হল নিজেকে। আত্মহত্যা মানে হল নিজেকে নিজেই শেষ করা।

আত্মহত্যার কারন

কেন নয়? আত্মহত্যা অবশ্যই একটি বাজে কাজ। যেসব বাজে কাজ অন্যের ক্ষতি করে, অন্যকে কাঁদায়, তাইতো পাপ। যখন কোন ব্যাক্তি নিজেকে মেরে ফেলে, তখন তো সে তার আপনজন কে খুব কাঁদায়। আর সেই কারনেই তো আত্মহত্যা মহাপাপ।

আপনি হয়তো অনেক মোটিভেশনেল বইয়ে পড়েছেন- “সব কিছুতেই আমার আমার করবেন না। আমার বাড়ী, আমার জিনিসপত্র, আমার সম্পত্তি ইত্যাদি। এই সব পার্থিব জিনিষের প্রতি লোভই তো মানুষকে বিপদ্গামী করে তোলে।

সেইরকমভাবে, আপনি যে আপনার আর সেই কারনে আপনি যা খুশী করতে পারেন, সেই ধারনাটাও ভুল। অন্যদের যতটা আপনার ওপরে অধিকার আছে, তার চেয়ে বেশী অধিকার আপনার নিজের ওপর আছে, সেটা ঠিক।

আত্মহত্যা মানে আপনার ভেতরে যে ঈশ্বর শক্তির বসবাস সেই শক্তি কে মেরে ফেলা। যে শক্তি সবসময় আপনার ভালো চেয়ে আসছে, সেই শক্তি কে ভুল বুঝে, সেই শক্তির খুন করাই হল আত্মহত্যা।

আত্মহত্যা করতে কেন ইচ্ছে করে?

আত্মহত্যা করতে কেন ইচ্ছে করে
আত্মহত্যার ইচ্ছে কেন

আচ্ছা, আপনার যদি জ্বর আসে, বা কোন রকম শরীর খারাপ হয় যেমন ধরুন পেটের সমস্যা, কিংবা টাইফয়েড,ডেঙ্গু ইত্যাদি, আপনি তো সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নেন, তাই না?

ডাক্তারের কথা মতো ওষুধ খান। সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য প্রানপনে চেষ্টা করেন। ডাক্তারবাবু যা বলেন তাই শোনেন। আপনার দীর্ঘদিনের নেশা অবধি আপনি ছেড়ে দেন।

তাহলে মনের মধ্যে কোনরকম সমস্যা হলে, আপনি এতো বিচলিত না হয়ে ডাক্তারের কাছে যান না কেন? শরীর খারাপ হলে তো মনে হয় না আত্মহত্যার কথা, মন খারাপ হলে কেন মনে হয়?

শরীরে ব্যথা হলে আপনি ভাবেন ডাক্তারবাবু সারিয়ে তুলতে পারবেন। আর মনের ব্যথাও ডাক্তারবাবুরাই সারিয়ে তুলতে পারবে, এই ভাবনাটায় বিশ্বাস হয় না কেন?

দেখে নেওয়া যাক মনের মধ্যে কি ধরনের সমস্যা হলে আত্মহত্যার কথা মাথায় আসে?

১। দীর্ঘদিনের মানসিক অবসাদ, হতাশা

হতাশা
হতাশায় কি কারন

দীর্ঘদিন ধরে কি কোন কারনে মানসিক অবসাদে ভুগছেন? কারো কোন কথায় কি আঘাত পেয়েছেন?

বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে মনের মধ্যে জমে থাকা আঘাতগুলো কাল্পনিক। মানে আপনি নিজেই অন্যজন সম্পর্কে অনেক কিছু ভেবে নিয়েছেন। আর সেই ভাবনাগুলোই আপনার মনকে দিনের পর দিন জর্জরিত করছে।

মনের মধ্যে যে কাঁটা গুলো আপনাকে বিঁধে, সেই কাঁটা গুলোকে আপনিই বড় করে তুলেছেন। আর সেই কারনেই ওই কাঁটাগুলোর মৃত্যু কামনা করুন।

কাঁটাগুলোকে উপড়ে ফেলুন। আপনি নিশ্চয় মনে মনে একটা পরিস্থিতির ছবি এঁকেছেন যা বাস্তবায়িত হলে আপনি খুব খুশী হবেন, আর আপনার মন ভালো হয়ে যাবে। আপনি মনে মনে ভাবুন যে আপনি যে ছবিটা এঁকেছেন তাই সত্যি হবে।

এতে আপনি কিছুটা সময়ের জন্য হলেও শান্তিতে থাকবেন। এইভাবে প্রত্যহ কিছুটা সময় দিন নিজেকে খুশী করার জন্য।

২। মানসিক রোগ

আপনি কি বুঝতেই পারছেন না কেন আপনার বাড়ীর লোকজনেরা আপনাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়? আপনি কি বুঝতে পারছেন না আপনাকে কেন মানসিক রোগের হাসপাতালে প্রায়ই দিন কাটাতে হয়?

কেমন যেন পৃথিবী? কেউ কি আপনার মনের মতো নয়? আপনার মনের কথা কি কেউ বোঝে না?

আপনি কি মনে মনে এইসব ই ভাবছেন- “পৃথিবীতে কি আমাদের কষ্ট বোঝার জন্য কেউ নেই? আমি কেন আর চার পাঁচ জনের মতো কাজ করতে পারি না? “

উত্তরগুলো এখানে- আপনি তো অসাধারন। আর আমরা সবাই সাধারন। অসাধারন মানুষকে চেনার জন্য যে পাওয়ার লাগে তা সাধারন মানুষের মধ্যে নেই। তাহলে খামোখা আপনি ওদের সাথে নিজেকে তুলনা করছেন কেন?

যারা সাধারন মানুষ, তাদের মধ্যে সব হরমোনের ব্যালেন্স আছে। তাই তো তারা সব কাজ ই ভালোভাবে করে ঠিকই কিন্তু কোন কাজেই আউটস্ট্যান্ডিং করতে পারে না। কিন্তু আপনার মধ্যে সেই অসাধারন ক্ষমতা রয়েছে।

আপনার মধ্যে সব হরমোনগুলোর মধ্যে ব্যালেন্স নেই বলেই তো আপনার বাবা মা আপনাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। আপনি দিন না তাদেরকে তাদের কাজ করতে। কিন্তু সেই ফাঁকে আপনি নিজেকে বোঝার চেষ্টা করুন।

একদিন ঠিক খুঁজে পাবেন আপনার ভেতরে লুকিয়ে থাকা প্রতিভা কিংবা বলতে পারেন জীবনের কোন দিকে এগোলে আপনি উন্নতি লাভ করবেন।

আর সেই কারনেই ডাক্তারবাবুকে ডাক্তারবাবুর কাজ করতে দিন এবং আপনি আপনার কাজ করতে থাকুন। এতে আপনি ক্রমশই মানসিক রোগ থেকে সুস্থ হয়ে উঠবেন।

৩। জেনেটিক

আত্মহত্যা করার টেন্ডেন্সি অনেকটা জিনগত। তাতে কি? সুগার রোগ ও তো জিনগত। তা হলে কি সুগার পেসেন্ট আত্মহত্যা করছে? নাকি সব সুগার রোগী মারা যাচ্ছে?

মনের রোগ কে কন্ট্রোল করা আমাদের দ্বারা কিছুটা হলেও সম্ভব কিন্তু শরীরের রোগ কে কন্ট্রোল করা কি সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব অবশ্যই তবে ওষুধ দিয়ে। মনের রোগ কিন্তু অনেক সময় ওষুধ ছাড়াও সেরে ওঠে।

মনের রোগ আপনিও সারাতে পারেন। মনের মধ্যে অনেক ম্যাজিক আপনি করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে ভালো ভালো বই কিংবা ব্লগ পড়তে হবে- আপনি কি করবেন তা জানার জন্য।

“হোক না মনের রোগ জেনেটিক/ তাও আমি হবো ঠিক। আমাকে সারাবো আমি আমার ওষুধ দিয়ে/ গোটা পৃথিবীকে এইভাবে দেবো চমকে।“

আমাদের আচার আচরন থেকে শুরু করে স্বপ্ন দেখা,ভাবনা চিন্তা এবং জীবনে বড় হয়ে ওঠা অবধি বেশীরভাগ টাই জিনগত। বাবা মা এর জিন এর সমন্বয়েই তো আমাদের সৃষ্টি। ওই জিন ই তো ঠিক করে আমরা কেমন হবো। না, এবার থেকে আমরা ঠিক করবো আমাদের জিন কেমন হবে।

আমরা আমাদের জিন কে কন্ট্রোল করবো আমাদের ভাবনা চিন্তার শক্তি দিয়ে।

৪। ব্যর্থতা   

আপনি কি চাকুরি পেতে ব্যর্থ হয়েছেন? পরিবারের কাছে কিভাবে মুখ দেখাবেন তাই ভাবছেন? বাড়ীতে ঢুকলেই অসংখ্য গঞ্জনা শুনতে হয় আপনাকে? সবাই আপনার কানের কাছে চিৎকার করতে থাকে-“ তোমার দ্বারা কিস্যু হবে না, এতোটা বয়স হল, এখনো চাকরি জোটাতে পারল না? নির্গুণ”

শুধু আপনার বাড়ীর লোক কেন, গোটা পৃথিবী আপনাকে এইরকম বলতে থাকলেও আপনি নুইবেন না। আর এইসব কথার প্রত্যুত্তোরও দেবেন না। চুপ করে থাকবেন। অনেক সময় “নীরবতাই বেস্ট আনসার হয়”।

আর মনের মধ্যে জমা করুন এক জেদ, এক গভীর আত্মবিশ্বাস। আপনার জন্য আপনি নিজে তো আছেন। তাই আত্মহত্যা করে আপনি নিজেই নিজের সঙ্গ ছাড়বেন না। যতদিন অবধি এই জেদ আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে আপনি নিজে আপনার পাশে থাকবেন, ততদিন অবধি খেলা থামবে না।

আর খেলা যদি না থামে, হার-জিত নিরধারন হবে কি করে? তাই কখনোই খেলার মাঠ থেকে পালিয়ে যাবেন না। খেলে যান। যতক্ষণ শরীরে শক্তি আছে, চেষ্টা চালিয়ে যান।

মনের শক্তি ইলাস্টিক রাবারের মতো। আপনি যতই টানবেন, ততই সেই শক্তি বাড়তে থাকবে।

৫। মন ভালো রাখার ওষুধ খাচ্ছেন কি?

আপনি কি মন ভালো করার ওষুধ খাচ্ছেন? তাহলে একা থাকবেন না। চেষ্টা করবেন বাড়ীর লোক কিংবা বন্ধু হোক বা প্রতিবেশী কারো কাছে থাকার।

যদি তা একান্তই সম্ভব না হয়, একাকীত্ব ঘোচাতে, প্রচুর পরিমানে পজিটিভ শক্তি লাভের বই রাখুন নিজের কাছে। বই থেকেই তো আপনার মনের চিন্তা ভাবনা গুলো বদলাবে। আর এই বদলে যাওয়া উন্নত মানের চিন্তা ভাবনাই তো আপনাকে নতুন পথের দিশা দেখাবে।

বই পড়তেও যদি ভালো না লাগে, তাহলে মুবাইল ফোন নিশ্চয় ভালো লাগে? মোবাইল ফোন থেকেই “মোটিভেশনেল ব্লগ” পড়ুন।

আত্মহত্যা কি করতেই হবে?

আত্মহত্যা কি করতেই হবে
আত্মহত্যায় কি একমাত্র সমাধান

Suicide is not an ultimate solution to a temporary problem

আত্মহত্যা কি করতেই হবে? এছাড়া আর কোন উপায়েই কি বেঁচে নেই আপনার কাছে? আপনি কি মন স্থির করে ফেলেছেন। মনে রাখবেন যে – যে চিন্তা ভাবনাগুলো আপনাকে আত্মহত্যা করাতে প্ররোচিত করছে সেই চিন্তা ভাবনাগুলোর সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর নন, অসুর।

আর এই অসুরের সাথে হাত মেলাচ্ছেন আপনি। সেই চিন্তাগুলো যাতে আত্মহত্যা করে, আপনার মধ্যে বাস করা অসুর যাতে আত্মহত্যা করে তার চেষ্টা করছেন না কেন?

ধরুন আপনি খেলার মাঠে খেলতে গেছেন। খেলার সময় এখনো অনেক ঘন্টা বাকি আছে। কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন যে আপনি হেরে যাচ্ছেন। তাহলে আপনি কি করবেন? খেলার মাঠ থেকে কি বেরিয়ে যাবেন? নাকি আপনি শেষ অবধি খেলাটা খেলবেন?

আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই ব্যর্থতা আসে। কিন্তু খেলার মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়া মানে -আমিই আমাকে হারতে সাহায্য করলাম; আমিই আমাকে বিশ্বাস করলাম না।

আত্মহত্যার প্রতিকার

চলুন আজ আমি আপনাদের শেখাবো আত্মহত্যার কারণগুলোর হত্যা কিভাবে করতে হয়-

১। কল্পনাশক্তি

কল্পনার রাজ্যে বিচরন করুন। যা কিছু আপনাকে কষ্ট দেয়, যা কিছু আপনাকে শান্তিতে থাকতে দেয় না, সেই সব কিছুর আত্মহত্যা হোক -এই কামনা করুন।

এই যে অশান্তি, দুঃখ, জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা, নেগেটিভ চিন্তা- এই সব কিছু তো আপনারই ছিল এবং তা আপনার শরীরের মধ্যেই বাসা বেঁধেছিল।

তাহলে এই সবের হত্যা কি আত্মহত্যা নয়? সব নেগেটিভ জিনিষেরা আত্মহত্যা করুক। কিন্তু আপনি কেন করবেন? আপনি তো আপনাকে তৈরি করেন নি। এই সুন্দর শরীর, আর তার ভেতরে যে মহান আত্মার বসবাস তা কি আপনি তৈরি করেছেন?

এই সব কিছু যখন তৈরি হয়েছিল, তখন তো আপনার মধ্যে চেতনাই ছিল না। এই সব কিছুর মালিক তো স্বয়ং ঈশ্বর। যখন সেই মহান আত্মার জন্ম দেন ঈশ্বর, তখন তো কোন নেগেটিভ চিন্তা ছিল না, ছিল না কোন অশান্তি।

তাহলে এই নেগেটিভ এজেন্ট গুলো এলো কোথা থেকে? এই সব কিছু এসেছে পরিবেশ থেকে। পরিবেশ ঠিক থাকলে কি ফুল গাছ হয়? বীজ বা চারা গাছ না লাগালে ফুল তো হয় না। তাহলে এই বীজ লাগালো কে?

এই বীজ কিন্তু আপনিই লাগিয়েছেন। আর পরিবেশ উপযুক্ত হওয়ায় নেগেটিভ শক্তির বীজ থেকে নেগেটিভ শক্তির গাছটি ভালোই বেড়ে উঠেছে।

তাই কল্পনার রাজ্যে ঘুরে ওই নেগেটিভ শক্তিগুলোকে মেরে ফেলুন। কল্পনাতে অন্ততপক্ষে সুখে থাকুন, শান্তিতে থাকুন।

কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভাবুন যে – আপনি খুব সুখে আছেন, আপনি জীবনটাকে উপভোগ করতে চান। সবই তো ঠিক আছে। ভালো কিছু করার জন্য বাঁচতে হবে আপনাকে।

২। পজিটিভ চিন্তা

পজিটিভ চিন্তায় নিজেকে সমৃদ্ধ করুন। পজিটিভ চিন্তার পজিটিভ প্রেসারে নেগেটিভ চিন্তা ঠিক বেরিয়ে যাবে।

পজিটিভ এবং নেগেটিভ এই দুই চিন্তারেই এক বিশাল আধার এই পৃথিবী। তাই কোনরকম সংকোচবোধ না করে পজিটিভ শক্তিই শুধু সংগ্রহ করবেন আর নেগেটিভ শক্তিকে পৃথিবীকেই ফিরিয়ে দেবেন।

পৃথিবী জানে কি ভাবে ওই নেগেটিভ শক্তিকে বিশাল এই রিজার্ভার এর এক কোনায় দমিয়ে রাখতে হয়।  

৩। আত্মবিশ্বাস

কল্পনা শক্তি দিয়ে আপনি নেগেটিভ শক্তির দমন আর পজিটিভ শক্তির রোপণ করেই ফেলেছেন। পজিটিভ শক্তির বীজ লাগিয়েও দিয়েছেন। এবার সেই বীজ থেকে যেন গাছ আর গাছ থেকে যেন ফুল,ফল হয় সেই জন্যই বীজের ওপর বিশেষ যত্ন নিন।

আত্মবিশ্বাস নামক সার ছড়ান সেই মাটিতে। দেখবেন পজিটিভ শক্তির গাছ হয়ে গেছে।

৪। আশা( HOPE)

আশা শুধু আপনাকে কেন, আমাদেরকেও বাঁচিয়ে রাখে। আশা এর সাথে আত্মবিশ্বাস যদি জুড়ে দেন, তাহলে এই দুটোই তো আপনাকে হাসি খুশী রাখার জন্য যথেষ্ট।

আশা থাকলে ক্ষণিকের জন্য হলেও মন পজিটিভ শক্তিতে ভরে যায়। আশাই তো মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার সবচে বড় ওষুধ।

৫। আত্মহত্যা

আত্মহত্যা যে কারনের জন্য করতে চাইছিলেন সেই কারণগুলোকে উপড়ে ফেলুন, নিজেকে নয়। নিজেকে শেষ করলে সমস্যার সমাধান নাও হতে পারে।

হতে পারে- আপনি আবার জটিল কোন সমস্যা নিয়ে অন্য কোন পরিবারে জন্ম নিলেন।আর তখনও সমস্যাটা থেকেই গেল।

আপনার হাতে যদি কোন কারনে র‍্যাশ বেরোয়, আপনি কি পুরো হাত টা কেটে দেবেন? নিশ্চয় না। আপনি চেষ্টা করবেন ওই র‍্যাশগুলো যাতে না হয়।

যে চিন্তাগুলো আপনাকে শেষ করে দিচ্ছে, আপনি ওই চিন্তাগুলোকে মেরে ফেলুন।

ধীরে ধীরে আপনি দেখবেন যে আপনার মধ্যে যে একটা কষ্ট পাওয়া “মন” ছিল, সেই মন আত্মহত্যা করেছে। আর তাতে আপনি অনেক ভালো আছেন।

এখন আপনি নতুন মানুষ হয়ে গেছেন, নতুন রূপে আপনার জন্ম হল, নতুন পজিটিভ মন নিয়ে।

এরপর অতীতের ওই ঝগড়াটে, কষ্ট পাওয়া রুপটিকে আপনারই কেমন যেন মনে হবে ওই রূপটি আপনার নয়।

সিদ্ধান্ত নিন

সিদ্ধান্ত নিন যে আত্মহত্যার ভাবনাগুলোকে চিরতরে মুছে সমস্যাগুলোর হত্যা করার কথা ভাবুন। আত্মহত্যার কারন ও প্রতিকার গুলো জানুন।

প্রতি বছর ১০ই সেপ্টেম্বার “world suicide prevention day” হিসেবে পালন করা হয়। উদ্দ্যেশ্য একটাই এই পৃথিবীকে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচানো।

প্রতিদিন আত্মহত্যার খবর খবরের কাগজে হেড লাইন হয়ে আসে।

কখনো শোনা যায় কিশোর কিশোরীরা পরীক্ষা তে পাস করতে পারে নি বলে, খেলার মাঠ থেকেই পালিয়ে গেল চিরতরে।

সে এটা কেন বুঝল না যে আরেকটু ভালো করে পড়লেই পরবর্তী বছরে সে পাস করে যাবে।

জীবন থেকে পালিয়ে গিয়েও তো সে রেহাই পাবে না। তাকে আবার নতুন করে খেলাটা খেলতে হবে।

ওপরের ওই ৫টি স্টেপ্স ফলো করেও যদি আপনারা ফল না পান আমাকে কমেন্ট বক্সে লিখে জানান।

আপনারা কমেন্ট করলেই তো আমি নতুন নতুন উপায় বার করতে পারবো। আবার নতুনভাবে আপনাদের সমস্যার সমাধান দিতে পারবো।

আপনারা যাদের আত্মহত্যা করার তীব্র ইচ্ছা কুঁকড়ে কুঁকড়ে আপনাদেরকে বিচলিত করতে থাকে তাদের প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ এই যে – যে জীবন আপনি তৈরি করেন নি সেই জীবন কে আপনি নিজ হাতে মারবেন না।

আপনি নিজেই যদি নিজেকে ভালো না বাসেন, অন্যেরা কি করে আপনাকে ভালো বাসবে? আপনিই হন আপনার সবচে ভালো বন্ধু। আপনিই সবার আগে আপনার পাশে দাঁড়ান। আর যারা এই সমস্যায় ভুগছে তাদের কে সাহায্য করুন আত্মহত্যার কারন ও প্রতিকার গুলো জানতে।

সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন, সবাইকে ভালো রাখুন। চলুন, সবাই মিলে একসাথে এক সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলি। এই পৃথিবীর প্রতিটি কোনা ভরে উঠুক ঈশ্বরের আশীর্বাদে! প্রতিটি মানুষ অবগত হোক আত্মহত্যার কারন ও প্রতিকার সম্পর্কে।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক পোস্ট