কিভাবে একা খুশি থাকতে হয়- কিছু অভিনব উপায়

কিছু কিছু উপায় ফলো করলে খুব সহজেই একা একা খুশী থাকা যায়।

আপনাকে কি বাড়ীতে প্রায়ই একা থাকতে হয়? আর একা থাকলেই কি মনের মধ্যে একরাশ দুশ্চিন্তা লম্ফঝম্ফ করতে থাকে? আপনি তো চান একা খুশি থাকতে, কিন্তু তাও পারেন না? আমরা এখানে কিভাবে একা খুশি থাকতে হয় তাই নিয়ে আলোচনা করবো।

প্রতিবার ভাবেন যে একা তো কি হয়েছে, এবার থেকে একা খুশি থাকবেন। এবার জেনে নিন একা খুশি থাকার উপায়গুলো। এই উপায়গুলো জানার পর আমি নিশ্চিত যে আপনার ভাবনা এবার সফলতা পাবেই।

শুধু আপনি কেন প্রত্যেকেরই জানা উচিৎ একা খুশি থাকার উপায়গুলো। আপনার খুশি অন্য কিছুর উপর নির্ভরশীল হওয়া একদমই উচিৎ নয়।

জীবনের কোন না কোন সময়ে সবাইকেই একা থাকতে হয়। চলুন, দেখে নেওয়া যাক সেই অভিনব উপায়গুলো কি কি যা আপনি ফলো করলে একা খুশি থাকতে পারবেন।

কিভাবে একা খুশি থাকতে হয়?

দেখে নিন কিভাবে একা খুশি থাকতে হয়, সেই উপায়গুলো-

১। ভাবনা চিন্তা বদলে ফেলুন

আপনি একা খুশি থাকতে কেন পারেন না তা কি জানেন? তার প্রধান কারন হল- একা থাকলেই আপনার মন মাটি খুঁড়তে থাকে। আর মাটি খুঁড়লে সবসময় তো আলু বেরোবে না, কেঁচোও বেরোতে পারে।

আপনার মনকে সতর্ক রাখুন। যে মুহূর্তেই কিছু নেগেটিভ চিন্তা মনে আশ্রয় নেবে, আপনি সেই মুহূর্তেই চিন্তাগুলোকে টারনিং করিয়ে দিন- নেগেটিভ থেকে পজিটিভ রাস্তার দিকে।

দুষ্টু, অবাধ্য ছেলের মতো মন মাঝে মাঝেই সুযোগ পেলেই নেগেটিভ রাস্তায় হাঁটতে থাকবে, কিন্তু আপনাকে এতোটাই সতর্ক থাকতে হবে যে নেগেটিভ রাস্তার মুখে ঢোকার সাথে সাথেই আপনি মন কে সেই রাস্তা থেকে পিছু হটাবেন।

এইভাবে ধীরে ধীরে ভাবনা চিন্তাগুলো বদলাতে থাকুন। আপনার প্রতি মুহূর্তের সতর্কতাই এই আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে আপনার জীবনে।

তারপর একদিন দেখবেন যে আপনার মনে ভালো চিন্তা, ভালো ছবিই শুধু ফুটে উঠছে। 

২। বইকে নিজের সঙ্গী ভাবুন

যখন আপনি একা থাকবেন, নানান রকমের বই যা আপনার ইচ্ছে তা পড়তে পারেন। এই একলা সময়টিকে কিছু ভালো কাজে লাগান।

এই একা থাকাটিকে সুযোগ হিসেবে দেখুন।

৩। ভালো ব্লগ পড়ুন কিংবা মোটিভেশনেল ভিডিও দেখুন

বই পড়তে যদি আপনার ভালো না লাগে, আপনি আপনার স্মার্ট ফোনটিকে কাজে লাগিয়ে আপনার পছন্দের ব্লগ গুলো পড়ুন কিংবা মোটিভেশনেল ভিডিও দেখুন।

এই যে একলা নিরিবিলিতে আছেন, তার সুযোগ বেশিক্ষণ পাবেন না। কিছু সময় পরেই তো বাড়ীর সবাই চলে আসবে; তাই সময়টিকে দ্রুততার সাথে কাজে লাগান।

আপনি কি বরাবরের জন্য একা থাকেন? তাহলে বই পড়া টাকে অভ্যেস করে নিন। যদি বাড়ীতে পর্যাপ্ত পরিমানে বই না থাকে, আর আপনিও তা কিনতে না পারেন; তাহলে ব্লগ পড়ুন।

৪। কর্মই ধর্ম

কর্মই ধর্ম। তাই তো অলসতা কে বা শুধু শুধুই বসে থাকা পরিত্যাগ করুন।

যখন আপনি কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকেন, দুষ্টু মন মাটি খুঁড়তে পারে না। আপনি যে কাজ করেন, তা শুধু পরিদর্শন করতে থাকে।

সবসময় ভালো কাজের মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। আপনার এখনকার কাজ অনুযায়ী মন ভবিষ্যতে ভাবতে থাকবে।

কাজের মধ্যে ডুবে থাকলে দেখবেন আপনার মনে হবে যে এই একলা সময়টা হুড়হুড় করে পেরিয়ে গেল।

৫। নিজেকে ভালবাসুন

নিজেকে ভালবাসুন। ধীর স্থির মনে, আপনার যে কাজগুলো ভালো লাগে, সেগুলোকে প্রাধান্য দিন।

প্রত্যেকটি মানুষের কিছু ভালো গুন আছে, কিছু ভালো কাজ করার শখ আছে। সেইগুলোকে খুঁজে বার করুন।

ছবি আঁকতে কি আপনার খুব ভালো লাগে? কিন্তু যখন বাড়ীতে সকলেই থাকে, তখন আপনি ছবি আঁকলে, সবাই নানান রকমের কথা শোনাতে থাকে?

তাহলে এই একলা সময়টিই আপনার ছবি আঁকার কাজে নিমগ্ন থাকার আদর্শ সময়।

৬। এই সময়টিকে কাজে লাগান

আপনার পছন্দের কাজগুলো করে এই সময়টি যে অনেক মুল্যবান, তা প্রমান করুন।

কিছু কিছু কাজ আছে যা একলা করাই উচিৎ। যেমন ধরুন- মেডিটেশেন, ব্লগ লিখা, ব্যায়াম করা ইত্যাদি।

আপনি এই একলা সময়টির জন্য রুটিন তৈরি করে নিন। তারপর কিছুক্ষণ মেডিটেশেন, কিছুক্ষণ ব্যায়াম করুন।

৭। প্রকৃতির মধ্যে থাকুন

প্রকৃতির মধ্যে ডুবে থাকলে, একা খুশী থাকা যায়।
প্রকৃতির সাথে থেকো, মন ভালো থাকবে।

প্রকৃতির মধ্যে থাকার চেষ্টা করুন। খোলা ছাদে আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির উদারতা কে পর্যবেক্ষণ করুন।

প্রকৃতির দেওয়া সকালের রৌদ্রে নিজেকে সিক্ত করুন; আর বিকেলে স্নিগ্ধতা গায়ে মাখুন।

৮। নিজের সুপ্ত ইচ্ছেগুলো কে পূরণ করার চেষ্টা করুন

প্রতিটি মানুষেরই কিছু না কিছু সুপ্ত ইচ্ছে থাকে। আর এই ইচ্ছে গুলো নানান লোকের মাঝে, নানান রকমের ভাবনা চিন্তায় চাপা পড়ে যায়।

এই একলা সময়ে আপনি নিজেকে বিশ্লেষণ করুন আর ওই সুপ্ত ইচ্ছে গুলো কে খুঁজে বার করুন।

আপনি প্রকৃতির নীচে দাঁড়িয়েও আত্ম বিশ্লেষণ করতে পারেন।

৯। গান শুনুন

একা খুশী থাকতে গেলে গান শোনার আনন্দ নিন। আপনি টেরই পাবেন কিভাবে সময় বয়ে যাচ্ছে।
গান শুনলে শরীর মন ভালো থাকে।

গান শুনলে আমাদের সকলের মন খুব ভালো হয়ে যায়। আর এই একলা সময়ে আপনাকে বিরক্ত করার কেউ নেই।

তাই আপনার পছন্দমতো গান আপনি যতক্ষণ খুশী শুনতে পারেন। আর তা আপনার স্মার্ট ফোন থেকেই শুনতে পারেন।

১০। ঘর গোছান

পরিষ্কার ঘর আমাদের মনকে পরিষ্কার করে দেয়।  তাই মাঝে মাঝেই ঘর গোছান। জামা কাপড় গুলো যদি গুছিয়ে রাখেন, দেখবেন অনেক খালি জায়গা বেরোবে যা আপনি নতুন নতুন ড্রেস রাখার কাজে লাগাতে পারেন।

আমি নিজে ৩মাস একা ছিলাম। আর এই তিন মাসে ২ খানা বই লিখে ফেলেছিলাম, ৪ টে কোর্স করেছিলাম।

এই একলা সময়ে অনেক কাজ করা যায় যা বাড়ীর লোকজনের মধ্যে থেকে করা যায় না। আপনারাও একা খুশি থাকার জন্য কি কি কাজ করছেন, তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানান।

যদি এইসব উপায় ফলো করতে আপনার সমস্যা হচ্ছে তাহলে সেই সমস্যাগুলো কি ধরনের তাও জানাতে ভুলবেন না যেন।

যেমন প্রশ্ন সবসময়ে আগে জন্ম নেয়, আর উত্তর তার মধ্যে নিহিত থাকে। আমাদের শুধু তা খুঁজে বার করতে হয়। ঠিক তেমনি সমাধানের উদ্ভব সমস্যার ঠিক পরে পরেই আসে।

আর সেই সমস্যাগুলো জানলে, একা খুশি থাকার জন্য, আমি আরও নতুন নতুন অভিনব উপায় নিয়ে আসবো আপনাদের সামনে।

আশা করি “কিভাবে একা খুশি থাকতে হয়” আপনারা তা জেনে প্রয়োগ করলে ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। পৃথিবীর প্রতিটি কোনা ভরে উঠুক ঈশ্বরের আশীর্বাদে।

2 thoughts on “কিভাবে একা খুশি থাকতে হয়- কিছু অভিনব উপায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক পোস্ট