তুমি কি খুবই চিন্তিত? তোমার বাবা মা কি জোর করে বিয়ে দিতে চাইছে? কিন্তু তোমার মন একদমই সায় দিচ্ছে না? আর সেই কারনেই কি তুমি নেট এ সার্চ করছ যে মেয়েদের কত বছর বয়সে বিয়ে করা উচিত? তুমি কি চাইছো একটা মনের মতো লিখা পেলেই তোমার মা বাবা কে দেখাবে? তাহলে এই লিখাটি তোমার জন্য। শেষ অবধি পড়তে থাকো।
চিন্তা না করে শেষ অবধি পড়ো কিন্তু। যে কোন সমস্যার সমাধান পেতে আমার সাইটের কমেন্ট সেক্সেনে কমেন্ট লিখে জানাতে দ্বিধা বোধ করো না যেন।
তাহলে শুরু করা যাক সেই লিখা টি যা তুমি তোমার মা বাবা কে পড়িয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারো। দম বন্ধ করা অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারো। আর যদি তুমি এমনিই জানতে চাও, তাহলেও শেষ অবধি পড়তে থাকো।
এইসব নিয়ে একটি ভিডিও বানিয়েছি যেখানে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে এই টপিক নিয়ে। ভিডিও টি দেখতে ক্লিক করো নীচে দেওয়া লিঙ্কে।
https://studio.youtube.com/video/hwB9U4kqBbY/edit
আর যদি ডিটেল এ পড়তে চাও, তাহলে পড়তে থাকো।
মেয়েদের কত বছর বয়সে বিয়ে করা উচিত?
যদি তোমাকে প্রশ্ন করি যে মেয়দের কতদূর লেখাপড়া শেখা উচিত, তুমি কি বলবে? তুমি কি পারবে কোন গণ্ডী টানতে? আমাকে যদি এই প্রশ্ন টাই করো, আমি বলবো – যতদিন তোমার ইচ্ছে থাকবে, যতদিন না অবধি তুমি নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছ, এমন কি তারপরেও নিজেকে ভাল রাখার জন্য লেখা পড়া করা উচিত।
এরপর আসি মেয়েদের কত বছর বয়সে বিয়ে করা উচিত এই প্রশ্নের উত্তরে। আমি বলবো- যতদিন না তুমি আর্থিকভাবে স্বাধীন হচ্ছ বা হওয়ার যোগ্যতা রাখছ, যতদিন না অবধি তুমি মেচিউর হচ্ছ।
সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছু বদলে যায়, যা আমাদের চখে পড়েও পড়ে না। যেমন ধরুন সূর্যের তাপমাত্রা, গ্রহ-উপগ্রহের গতি, বাতাসে কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমান। তুমি ভাবছ এইসব কেন বলছি। তা ধীরে ধীরে অবশ্যই জানতে পারবে।
আচ্ছা, শুধুই কি বাইরের জগত সময়ের সাথে সাথে বদলায়? আমরা বদলায় না? অনেক অনেক বছর আগে মেয়েরা কি চাকুরী করত? নিশ্চয়ই না, আর করলেও সেই সংখ্যা হাতে গোণার মতো। রামায়ন বা মহাভারতে কোন নারী চরিত্র কেই জীবিকা নির্বাহের জন্য চিন্তিত হতে দেখা যায় নি। তাহলে আজ কেন দেখা যায়?
অনেক পুরান ধর্ম গ্রন্থ ঘাঁটলে হয়তো দেখতে পাওয়া যেতে পারে যে –নারী জাতির জন্মই হয়েছে পুরুষের সেবা করার জন্য। তাই যদি হয়ে থাকে- আজ সেই নারীর মন এত বিচলিত কেন? যে পুরুষ সেই নারী কে জন্ম দিয়েছে, সেই পুরুষের কথা মতো বিয়ে করে নিলেই তো হয়!
আর তুমিও যদি তাই করো মনের বিরুদ্ধে গিয়ে তোমার বাবার কথা মতো বিয়ে করে নাও, তাহলে তুমি রামায়নের যুগে জন্ম নিলে আমি বলতাম একদম ঠিক কাজ করেছ, কিন্তু আধুনিক সমাজের নারী হয়ে যদি সেই একই কাজ করো, তাহলে বলবো নিজের সাথে অন্য্যায় করেছো।
আর যে নিজের সাথে অন্যায় করে এবং যে অন্যের সাথে অন্য্যায় করে- সমাজের চোখে দুজনেই সমান অপরাধী।
আমাদের সমস্যা একটাই- সময়ের সাথে সাথে আমরা নিয়মগুলোকে বদলায় না। তবে বর্তমান কেন্দ্র সরকার মেয়েদের বিয়ের নুন্যতম বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করেছেন। বয়স বাড়ানোর সাথে সাথে বিয়ের মন্ত্র গুলো ও বদলানো দরকার। এইরকম অনেক কিছু রীতি নীতির বদলের সময় এসেছে। মানুষ না বদলালে, সমাজ মানুষ কে দিয়ে এই কাজ ঠিক কোন না কোন সময় করিয়ে নেবে।
কেন মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে করা উচিত নয়
এরপর বলবো সেইসব কারণ গুলো কেন মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে করা উচিত নয়।
১. অবুঝ মন
ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে সকলের জন্যই মন বড়ই অদ্ভুত। আমাদের কে যদি কম বয়সেই একটা পুরো পরিবারের দায়িত্ত্ব নিতে বলা হয়, তাহলে কি আমরা পারবো? আমরা কি পারবো ১০-১২ জনের রান্না করতে ১৮ বছর বয়সে? কিম্বা আমরা কি পারবো ১৮ বছর বয়সে বাবার মতো করে পরিবারের আর্থিক দায়িত্ত্ব নিতে?
মনের ও বয়স হয়। শরীর যেমন বয়সের সাথে সাথে শক্তিশালী হয়ে ওঠে, একটা নির্দিষ্ট বয়স অবধি। তারপর অবশ্য বেশী বয়স হলে সেই শক্তি আবার কমতে থাকে। ঠিক সেইরকম ভাবে ১৫-২০ বছর বয়সে মন নানান রকমের ভাবনায় ডুবে থাকে বলে বাস্তব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকে না।
মন যখন বাস্তব সম্পর্কে সচেতন, শরীর যখন দায়িত্ত্ব নিতে পটু, তখনই বিয়ে করা উচিত, তার আগে কখনোই নয়।
বিবাহ মানে হল মিলনের মাধ্যমে একটা নতুন পরিবার নামক ইন্সটিটিউট এর জন্ম দেওয়া। অবুঝ মন নিয়ে, বাস্তব সম্পর্কে ধারনা ছাড়া কি ইন্সটিটিউট তৈরি করা যায়?
২. লেখাপড়া তে ব্যাঘাত
একটা সময় অবধি ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে প্রতিটা মানুষের লেখাপড়াই প্রধান কাজ হওয়া উচিত। লেখাপড়ার মাধ্যমে মনের অজ্ঞতা কে দূর করা উচিত। কিন্তু সেই সময়ে যদি পরিবার নামক ইন্সটিটিউট তৈরি করা হয়, তাহলে তো লেখাপড়াতে ব্যাঘাত হবেই।
৩. বাবা মায়ের দায়িত্ত্ব নেওয়ার যোগ্যতার অভাব
কম বয়সে বিয়ে করলে, কোন মেয়েই তার নিজের বাবা-মা এর দায়িত্ত্ব নিতে পারবে না, যেখানে শুধুই ভালবাসা। আর এইরকম ক্ষেত্রে শ্বশুর- শাশুড়ির দায়িত্ত্ব নেওয়া তো দুরের কথা, যেখানে ভালবাসার অভাব দেখা যায়। তবে এর ব্যতিক্রমও থাকে।
৪. একান্নবর্তী পরিবার
বর্তমানে বেশীরভাগ পরিবারই একান্নবর্তী পরিবার। এর ফলে প্রতিটি মেয়েই বাবা মা এর গভীর ভালবাসাতে মানুষ হয়ে থাকে। আর মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা কম হয়ে থাকে।
কম বয়সে বিয়ে করলেই অনেক গুলো নতুন মানুষের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয় যা হয়ে ওঠে খুবই কঠিন কাজ।
৫. হরমোনের পরিবর্তন
কম বয়সে হরমোনের জন্যই বাস্তব সম্পর্কে চিন্তাধারা কম থাকে। এর ফলে কিছুটা খামখেয়ালি প্রকৃতি থেকে যায়। তাই বিয়ে করে নতুন সন্সারে মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়ে থাকে।
৬. পাশ্চাত্য দেশের সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ
পাশ্চাত্য দেশের ড্রেস স্টাইল, কালচার এই দেশে অনুপ্রবেশ করার ফলে এখনকার মেয়েদের, আগেকার দিনের মেয়েদের সাথে মানিয়ে নেওয়া টা কষ্টকর হয়ে ওঠে।
নিজের মা এর সাথেই যে মেয়েরা মানিয়ে নিতে পারে না, সেইসব মেয়েরা বিয়ে করে অন্যের মায়ের সাথে মানিয়ে নেবে কিভাবে? এতটা আশা করাও ভুল।
আর যদি মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা না থাকে, তাহলে বিয়ে করাও উচিত নয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে,সব কিছুর সাথে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে।
তাই মেচিউরিটি এলে, দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করে, বাস্তব টাকে মানিয়ে নিতে শিখলে পরেই বিয়ে করা উচিত।
৭. আর্থিক স্বাধীনতা
বর্তমান সমাজে প্রতিটি মেয়েরেই অর্থ উপার্জনে সক্ষম হওয়া উচিত। এখন আর যেহেতু যৌথ পরিবার দেখাই যায় না, তাই জীবনে অনেক সমস্যা বেড়ে গেছে। জীবন এখন অনিশ্চিত। একটা মেয়ের সর্বনাশে বাড়ীর নিজের লোকেরা সহানুভূতি দেখায় ঠিকই, কিন্তু কেউই মেয়েটির আর্থিক দায়িত্ত্ব নিতে চায় না।
কম বয়সে বিয়ে হয়ে গেলে, বেশীরভাগ মেয়েই সংসারের সুখ দুঃখের সাথে জড়িয়ে পড়ে আর ব্যস্ত হয়ে ওঠে। সেইজন্যই আর আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে না।
এইসব কারনের জন্যই কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে করা উচিত নয়। এখনো অনেক গ্রামে গঞ্জে মানুষের ধারনা আছে যে মেয়েদের চাকুরী করা উচিত নয়। এই বাজে ধারনার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। সংসারের কাজ যেমন একটা ছেলেরও করা উচিত ঠিক তেমনি টাকা রোজগার করার কাজও একটা মেয়েরও করা উচিত।
উপসংহার
ছেলে মেয়ে বিচার না করে, আমরা সবাই মানুষ। আর তাই একে অপরের চাওয়া পাওয়াগুলোর দিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কাজের মধ্যে লিঙ্গ খোঁজা টা অন্যায়। শুধু মেয়ে কেন, একটা ছেলেরও কম বয়সে বিয়ে করা উচিত নয়।
আশা করি সকল বাবা মা রাই বুঝতে পেরেছেন যে মেয়েদের কত বছর বয়সে বিয়ে করা উচিত। এমনকি সব মেয়েদেরও জানা উচিত যে মেয়েদের কত বছর বয়সে বিয়ে করা উচিত। ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সকলকে ভাল রাখবেন।
Pretty! This has been a really wonderful post. Many thanks for providing these details.
I very delighted to find this internet site on bing, just what I was searching for as well saved to fav
very informative articles or reviews at this time.