মেয়েটির তোমার প্রতি ভালোবাসা আছে কিনা জানার জন্য অস্থির তোমার মন? প্রত্যেকদিন কলেজে ক্লাসের শেষে ভাবো যে মেয়েটিকে আজ বলেই ফেলবে তোমার ভালোবাসা এর কথা।
কিন্তু তৎক্ষণাৎ একটা ভয় কাজ করে- যদি সে আমাকে না ভালবাসে। এমনটা কি তোমার সাথেও হয়? তাই খুব জানতে ইচ্ছে করে তার মনে তোমার জন্য জায়গা কতখানি?
তবুও জানা হয় না। মাঝে মাঝে হাবে ভাবে তোমার মনে হয় –না, না, সেও তোমায় ভালবাসে।
ভালবাসে বলেই তো তোমার জন্মদিনে প্রথম উইশটা ওই করেছে।
তারপর সারাদিন আর কথা নেই, চোখাচোখি নেই। আবার সন্দেহ বাসা বাঁধছে মনে? তাহলে কি ভালবাসে না?
এইরকম সন্দেহের মধ্যে আছো? সন্দেহের মধ্যে থাকা সত্বেও তোমার তার প্রতি ভালোবাসা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অস্থির হয়ে পড়ছো মেয়েটির মনের কথা জানার জন্য?
তাহলে নীচের এই কয়েকটি সঙ্কেত মেয়েটির মধ্যে পাচ্ছ কিনা দেখে নিও-
১। কেয়ারিং নেচার- ভালোবাসা এর পরিচয়
“এত স্পায়সি খাবার একদম খেয়ো্ না”, “বেশী করে জল খাবে কিন্তু”, “তোমাকে খুব বিধ্বস্ত লাগছে, কোন সমস্যাতে আছো”, “ তোমার বাড়ীতে সবাই ঠিক আছে তো”- এইসব কথা যদি প্রায়ই সেই মেয়েটি তোমায় উদ্দ্যেশ্য করে বলতে থাকে; তাহলে জানবে যে সে তোমায় সত্যিই ভালবাসে।
মেয়েরা যখন কোন ছেলেকে সত্যিকারের ভালবাসে, তখন সে একজন মা যেমন তার সন্তানের খেয়াল রাখে; ঠিক সেইরকমেই খেয়াল রাখে সেই ছেলেটির।
ছেলেটির সামান্য আঘাত মেয়েটি সহ্য করতে পারে না। মেয়েটির মধ্যেও একটা অস্থিরতা তুমি দেখতে পাবে।
মেয়েদের কেয়ারিং নেচার তুমি দেখতে পাবে। কিন্তু মেয়েরা কখনোই আগ বাড়িয়ে ভালোবাসার কথা জানাতে পছন্দ করে না।
মেয়েটি মনে মনে ভাবতে থাকে-“ আমি এত খোঁজ নিই, এতো কেয়ার করি, তাও সে বুঝতে পারে না; এতো হাঁদা ছেলে আমি দেখি নি কখনো”।
তাই এইসব কেয়ারিং নেচার দিনের পর দিন দেখতে থাকলে তুমি নিশ্চিত হতে পার যে সে তোমায় ভালোবাসে। মেয়েরা সত্যিকারের ভালবাসলে, কোন কিছুতে ক্লান্ত হয় না। এক অফুরন্ত শক্তি সে পেয়ে যায়।

২। ভালোবাসা থাকলে প্রশংসা সে করবেই
যদি সে তোমার ভালো গুন গুলোর প্রশংসা করে, আর দোষগুলোকে খুব ভালভাবে বোঝাবার চেষ্টা করে তাহলে জানবে যে সে সত্যিকারের ভালোবাসে।
মেয়েটি সত্যিকারের ভালবাসলে সে বাড়িয়ে বাড়িয়ে তোমার প্রশংসা কখনোই করবে না।
যখন একটি মেয়ে একটি ছেলেকে সত্যিকারের ভালোবাসে, মেয়েটি সেই ছেলেটিকে নিজের বাড়ীর সবচে প্রিয় সদস্যের জায়গায় বসিয়ে ফেলে।
তোমার নেগেটিভ সাইডগুলোতে যদি সে ভেতর থেকে কষ্ট পাই, আর বারে বারে তোমাকে পজিটিভ সাইডে নিয়ে আসার চেষ্টা করে থাকে; তাহলে তুমি নির্দ্বিধায় তাকে তোমার ভালোবাসার কথা জানাতে পারো।
সেও তো তোমার কাছে থেকে অইসব শোনার জন্যই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

৩। খুশি খুশি ভাব
প্রথম প্রথম মেয়েটি যখন একটি ছেলেকে সত্যিকারের ভালবেসে ফেলে, মেয়েটির মধ্যে প্রচুর হাসি খুশি ভাব পরিলক্ষিত হয়।
মেয়েটিও নিজের খেয়াল রাখতে শুরু করে, খুব ভালো ড্রেস-আপ করে। সবসময় নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য যা যা করা দরকার তাই তাই করে থাকে।
মেয়েটি যদি তোমাকে বেশ কয়েক মাস ধরে ভালবেসে থাকে, তাহলে এতদিনে তার মুখের মধ্যে একটা গ্লেজ দেখা দেবে।
যদিও এই সবের ব্যতিক্রমও হতে পারে। যদি মেয়েটির বাড়ীতে তার পরিবারের সদস্যরা ভালো না থাকে, তাহলে অবশ্য মেয়েটির মুখে চিন্তার ছাপের জন্য গ্লেয আসবে না।

এইখেত্রে, মেয়েটি তার পরিবারের সমস্যার সমাধানের জন্য অন্য কোন ভাবে তোমার কাছে থেকে সাহায্য চাইবে।
মেয়েটি এমনভাবে সাহায্য চাইবে যে তুমি ধরতেই পারবে না সে তার বাড়ীর লোকের জন্য সাহায্য চাইছে।
৪। ভালোবাসা দুঃসাহস এনে দেয়
মেয়েরা যখন কোন ছেলেকে ভালোবাসে, সে সব দিক দিয়ে এক ধাপ বড় হয়ে যায়। সাহস ও তার ডাবল হয়ে যায়।
তোমার যে কোন সমস্যায় সে তোমাকে যেকোনো ভাবে সাহায্য করার জন্য সব সময় তৈরি থাকবে।

তবে তুমি যেদিন তাকে তোমার ভালোবাসার কথা জানাবে, সেও যখন নিশ্চিত হয়ে যাবে যে তুমি তাকে খুব ভালবাস; তখন থেকে তার সাহস আবার কমতে থাকবে। সে তোমাকে গার্জেন হিসেবে দেখতে থাকবে।
৫। তোমার দুদিন খবর না পেলে তার মনে চঞ্চলতাই তো সত্যিকারের ভালোবাসা এর কথা বলে
তোমার সন্দেহ দূর করার জন্য তুমি কয়েকদিন তার থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারো। এমনভাবে সরিয়ে রাখো যেন সে তোমায় ওই কয়েকদিন একবার এর জন্যও চোখের দেখাও দেখতে না পায়।
তুমি শুধু চুপচাপ বসে থাকবে। কাউকে কিচ্ছু জিগ্যেসও করবে না। দুদিন পর থেকেই দেখবে তোমার বন্ধুরা তোমায় কল করে বলছে-“ কি রে, কোথায় গা ঢাকা দিলি? একজন তো প্রত্যেকদিন তোর খোঁজ করে করে পাগল হয়ে যাচ্ছে। সেই হাসি খুশি মেয়েটার মুখে বিষণ্ণতা আর দেখা যাচ্ছে না।“
আর এইসব শোনা মাত্র তুমি এক লাফে তার কাছে পৌঁছে হাজির হয়ে মিষ্টি কথায় জিগ্যেস করো- “শুনলাম, নাকি তুমি খোঁজ করছিলে, এনি প্রব্লেম?” মেয়েটি হয়তো এর উত্তরে লজ্জা পেয়ে কিছু না বলে পালিয়ে যাবে কিম্বা বলবে –“কেন ক্লাসমেট এর খোঁজ নেওয়া টা কি অপরাধ?”
তুমি যদি নিশ্চিত হয়েই গিয়েছ যে সে তোমায় ভালোবাসে, তাহলে আর দুষ্টু মিষ্টি কনভারসেশন না চালানোই ভালো। এতে মেয়েটির হ্রদয় আহত হয়।

৬। ভালবাসা যেখানে তোমার বিপদে ছুটে আসা সেখানে
তোমার সামান্য আঘাতে, তোমার চেয়ে বেশী বিচলিত হবে মেয়েটি। হয়তো সরাসরি সে টা প্রকাশ করতে পারবে না। কিন্তু মেয়েটির মুখ খানা দেখলেই বোঝা যাবে যে সে কোন কারনে খুবই উদ্বিগ্ন।
হয়তো তুমি ফোনে কোন উদ্বিগ্নের কথা শুনছো বাড়ীর লোকের থেকে, মেয়েটিও সেইসব কিছু শোনার বা জানার চেষ্টা করে থাকবে।

৭। তোমার ক্যারিয়ার সম্পর্কে তার সচেতনতা- ভালোবাসা এর ইঙ্গিত
তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও, কিভাবে পরীক্ষার প্রিপারেশেন নিচ্ছো এইসব কিছু তথ্য সে কোন না কোন ভাবে আদায় করবে। যতদিন না তুমি তাকে তোমার ভালোবাসার কথা জানাচ্ছ, ততদিন অবধি সে এইসব তথ্য সরাসরি জিগ্যেস হয়তো নাও করতে পারে। কিন্তু অন্য কোন বন্ধুর সহায়তায় সে তোমার এইসব কিছু জেনে নেবে।
যদি কোন বিষয়ে তোমার জ্ঞান বেশী থাকে, তাহলে সে তোমার নোটটাও চাইবে। হয়তো তোমার চেয়েও কিছু ভালো ছাত্র আছে, কিন্তু টাও সে তোমারটাই চাইবে।
তোমার কম নম্বর পাওয়াটা তার সহ্য হবে না, বরং তুমি বেশী নম্বর পেলে সে গর্ববোধ করবে। সে এমন গর্ববোধ করবে যে লোকে ভাববে সেই বোধ হয় খুব বেশী নম্বর পেয়েছে।
সে তোমায় উৎসাহ জোগাবে আর ভালো রেজাল্ট করার। সে তোমায় পজিটিভ চিন্তা করতে শেখাবে। তোমার চলার পথে সে পজিটিভ ক্যটালিস্ট এর কাজ করবে।

তোমার খুশীতেই তার খুশী, তোমার দুঃখেই তার দুঃখ। তোমার নম্বরই তার নম্বর, তোমার গর্বই তার গর্ব।
৮। জিলাস
তুমি যদি অন্য মেয়ের সাথে খুব হাসতে হাসতে আনন্দের সাথে অনেকক্ষণ ধরে কথা বল, সে ভেতরে একটা অস্বস্তি অনুভব করবে যা তার চোখগুলো দেখেই তুমি বুঝতে পারবে।
তার চোখে তুমি একটা কষ্টের ছাপ দেখতে পাবে যা অন্যদিন ছিল না। অন্যদিনের হাসি খুশি ভাবটা যেন হটাত করে মিলিয়ে গেছে।
সে নিজেকে ওইসব মেয়েদের থেকেও বেশী সুন্দর দেখানোর চেষ্টা করে থাকবে।
এই ৮ টি সঙ্কেত যদি দেখতে পাও মেয়েটির মধ্যে, তাহলে নিশ্চিন্ত মনে তুমি মেয়েটিকে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব তোমার ভালোবাসার কথা জানিয়ে দাও। শুভস্য শিঘ্রম। ভালোবাসার সমুদ্রে ডুবে গিয়ে বাস্তবকে ভুলে যেও না। পরিবার এর প্রতি দায়-দায়িত্ব বজায় রাখলেই মেয়েটি খুশী হবে।
ভালোবাসার মানুষটিকে পেয়ে তো গেলে, এরপর সেই ভালবাসা বজায় রাখার দায়িত্ব তোমার। শুধু মনে রেখো যদি তুমি তোমার মা কে খুব ভালোবাসো, তাহলেই মেয়েটির মনে আশার আলো জাগবে। জানো তো-যেসব ভালো ছেলেরা তার মায়ের প্রতি যত্নবান হয়, তারাই তাদের স্ত্রীকে ভালবাসতে পারে। ভালো মেয়েরা এমনটাই ভাবে।
সুস্থ থেকো, ভালো থেকো, সবাইকে ভালো রাখো। চলো, সবাই মিলে একসাথে এক সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলি। এই পৃথিবীর প্রতিটি কোনা ভরে উঠুক ঈশ্বরের আশীর্বাদে!